ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এবং কোটি কোটি মানুষের আবেগের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে, এই খেলাটি অসংখ্য কিংবদন্তি খেলোয়াড় তৈরি করেছে যারা তাদের দক্ষতা, ক্রীড়াশৈলী এবং অবদানের মাধ্যমে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন।
বিশ শতকের শেষভাগ ও একবিংশ শতাব্দীর ফুটবল বিশ্বে দুই মহাতারকার লড়াই বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। লিওনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো – এই দুই কিংবদন্তির কে সেরা, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে চায় সকলেই।
গোল সংখ্যা, দৃষ্টিনন্দন গোলের হার, নিজের গোলের সংখ্যা, সতীর্থকে গোল করানোর ক্ষমতা – এইসব নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।
এই বিতর্কের সমাধানে এগিয়ে এসেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল। তারা সর্বকালের সেরা ৫০ ফুটবলারের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়রকে এই তালিকায় দেখা যায়নি।
সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে?
সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? এই বিতর্কের কিছুটা সমাধান করতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল সর্বকালের সেরা ৫০ ফুটবলারের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় শীর্ষ দশে জায়গা পেয়েছেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে আশ্চর্যজনকভাবে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়র এই তালিকায় জায়গা পাননি।
এই ব্লগ পোস্টে, আমরা ডেইলি মেইল এর সুত্র ধরে সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলারদের একটি তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করব।
সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের তালিকা
১০. ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো:
অনেকেই যাকে সর্বকালের সেরা মনে করেন, তিনি এই তালিকায় ১০ম স্থানে! ক্যারিয়ারে ৫টি ব্যালন ডি’অর জয়ী এবং সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো। পর্তুগালের হয়ে ১২৮ গোল করে সর্বকালের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ড গড়েছেন এই ৩৯ বছর বয়সী ফুটবলার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও তার রেকর্ড অসাধারণ – ১৪১ গোল সহ ৫ বার শিরোপা জয়ী।
৯. জিকো:
ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি জিকো কখনও বিশ্বকাপ জয় না পেলেও ব্রাজিলে অনেক বিশ্বকাপজয়ী তারকার চেয়েও বড় নায়ক হিসেবে বিবেচিত। ডেড-বল দক্ষতার জন্য বিখ্যাত জিকো ১৯৮২ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপ দলের অন্যতম তারকা ছিলেন।
৮. গারিঞ্চা:
আরেক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি গারিঞ্চা রোনালদো ও জিকোকে টপকে অষ্টম স্থানে। ১৯৫৮ সালের ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক হিসেবে গারিঞ্চাকে গণ্য করা হয় এবং ১৯৬২ সালে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছিলেন।
৭. রোনালদো নাজারিও:
‘আসল রোনালদো’ খ্যাত এই তারকা রোনালদোর চেয়েও এগিয়ে। দুর্ভাগ্যবশত তার ক্যারিয়ারের শেষভাগ ছিল অপ্রত্যাশিত, তবুও তার সহজাত প্রতিভা অস্বীকার্য
৬. আলফ্রেডো ডি স্টেফানো:
রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে কিংবদন্তি পর্যায়ে থাকা আলফ্রেডো ডি স্টেফানো ষষ্ঠ স্থান দখল করেছেন। তিনি পাঁচটি ইউরোপীয়ান কাপ জিতেছিলেন।
৫. জিনেদিন জিদান:
ফরাসি মিডফিল্ড জাদুকর জিনেদিন জিদান পঞ্চম স্থানে। মূলত তার অসাধারণ কৌশল, দৃষ্টিনন্দন খেলা এবং লিডারশিপের জন্য তিনি স্মরণীয়। মাথা দিয়ে করা বিখ্যাত জিদানের গোলটি ফাইনালের ইতিহাসে সেরা গোলগুলির মধ্যে অন্যতম।
৪. ইয়োহান ক্রুইফ:
ডাচ কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ চতুর্থ স্থানে। কেবল খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, কোচ হিসেবেও ফুটবলে বিপ্লব এনেছেন তিনি। ‘টোটাল ফুটবল'(senjutsu, tactics) এর জনক হিসেবে পরিচিত ক্রুইফ আজকের ফুটবলেও অনুপ্রেরণা জোগান।
৩. ডিয়েগো ম্যারাডোনা:
মেসির ঠিক আগে তৃতীয় স্থানে আছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা। অসাধারণ ড্রিবলিং, গোল করার কৌশল এবং ১৯৮৬ বিশ্বকাপে একাই আর্জেন্টাইনাকে শিরোপা এনে দেওয়ার কীর্তি তাকে আজকের দিনেও কিংবদন্তির মর্যাদা দেয়।
২. পেলে:
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলে। তিনি একমাত্র ফুটবলার, যিনি ৩ বার বিশ্বকাপ জিতেছেন। ১৯৫৮ সালে কিশোর বয়সে প্রথম বিশ্বকাপ জেতা থেকে শুরু করে ১৯৭০ বিশ্বকাপজয়ী দলের নেতা হিসেবে পেলের অবদান অসামান্য।
১. লিওনেল মেসি:
বর্তমান ফুটবল জগতের সম্রাট লিওনেল মেসি এই তালিকার শীর্ষে। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারের শেষ অসম্পূর্ণতা পূরণ হয়েছে। এছাড়াও সর্বকালের সর্বোচ্চ ৮ বার ব্যালন ডি’অর জেতা, বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা – এইসব অর্জন তাকে ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের একজন করে তুলেছে।
তবে এই তালিকা অবশ্যই বিতর্কিত হতে পারে। অনেকে মনে করতে পারেন অন্যান্য খেলোয়াড়, যেমন রবার্টো বাগিও, ইউসেবিও, ফ্রাঙ্কো বারেসি, ইত্যাদি এই তালিকায় থাকার যোগ্য।
ফুটবলের ইতিহাসে অসংখ্য প্রতিভাবান খেলোয়াড় এসেছেন এবং তাদের নিজস্ব উপায়ে খেলায় অবদান রেখেছেন। “সর্বকালের সেরা” খেলোয়াড় নির্বাচন একটি কঠিন কাজ, তবে উপরে তালিকাভুক্ত খেলোয়াড়রা নিঃসন্দেহে সেরাদের মধ্যে কয়েকজন।
আপনার মতে, সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? কমেন্টে জানাতে পারেন।