SC > বাংলা ব্যাকরণ > পত্র বা চিঠির কয়টি অংশ | চিঠি লেখার কয়টি অংশ থাকে

পত্র বা চিঠির কয়টি অংশ | চিঠি লেখার কয়টি অংশ থাকে

‘পত্র’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো চিহ্ন বা স্মারক। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে মানবমনের কোনো ভাব, সংবাদ, তথ্য, আবেদন ইত্যাদি অপরের কাছে লিখিতভাবে জানানো হলে, তাকে সাধারণভাবে পত্র বা চিঠি বলে। আজকের আর্টিকেলে আমরা পত্র বা চিঠির কয়টি অংশ | চিঠি লেখার কয়টি অংশ থাকে এসব নিয়ে আলোচনা করব।

পত্র বা চিঠির কয়টি অংশ

পত্র বা চিঠির কয়টি অংশ | চিঠি লেখার কয়টি অংশ থাকে

পত্র বা চিঠিতে মূলত দুটি অংশে থাকে। এগুলো হলো:

  • শিরোনাম এবং
  • পত্রগর্ভ

১. শিরোনাম: এটি চিঠির উপরের অংশে থাকে এবং এতে সাধারণত প্রাপক ও প্রেরকের ঠিকানা, চিঠি লেখার তারিখ, এবং যদি প্রয়োজন হয়, কোনো সালাম বা সম্ভাষণ অন্তর্ভুক্ত থাকে। শিরোনামের মধ্যে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো থাকতে পারে:

  • তারিখ (Date)
  • প্রেরকের ঠিকানা (Sender’s address)
  • প্রাপকের ঠিকানা (Receiver’s address)
  • সম্ভাষণ (Salutation), যেমন “প্রিয় জনাব” বা “শ্রদ্ধেয় মিসেস”

২. পত্রগর্ভ: এটি চিঠির মূল বিষয়বস্তু যেখানে লেখক তার বার্তা বা উদ্দেশ্য প্রকাশ করেন। পত্রগর্ভের মধ্যে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো থাকতে পারে:

  • পরিচিতি বা ভূমিকা (Introduction)
  • মূল বার্তা বা বিষয়বস্তু (Body of the letter)
  • উপসংহার (Conclusion)
  • বিদায় সম্ভাষণ (Closing salutation), যেমন “ইতি,” বা “শুভেচ্ছান্তে,”

বাংলা চিঠির বা ব্যক্তিগত পত্র সাধারণত ছয়টি অংশ থাকে। অর্থাৎ, একটি চিঠি বা পত্র সাধারণত নিম্নলিখিত অংশগুলো নিয়ে গঠিত।

  1. প্রেরকের ঠিকানা ও তারিখ:
    • চিঠির শুরুর দিকে প্রথমে তারিখ দিতে হয়। যা চিঠি লেখার দিনটি নির্দেশ করে। তারিখের পর প্রেরকের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়, যাতে প্রাপকের পক্ষে প্রেরককে চিহ্নিত করা সহজ হয়।
    • উদাহরণ: তারিখ ও প্রেরকের ঠিকানা
  2. প্রাপকের ঠিকানা:
    • প্রেরকের ঠিকানার নিচে প্রাপকের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়। তবে, ব্যক্তিগত চিঠিতে এটি সবসময় প্রয়োজন হয় না।
    • উদাহরণ: প্রাপকের ঠিকানা
  3. সম্বোধন:
    • এটি চিঠির শুরুতে প্রাপকের প্রতি সম্ভাষণ বা সম্বোধন। সাধারণত “প্রিয়” বা “সন্মানিত” দিয়ে শুরু হয়।
    • উদাহরণ: প্রিয় বন্ধু,
  4. বিষয় বস্তু বা মূল লেখা:
    • এটি চিঠির প্রধান অংশ যেখানে প্রেরক তার বার্তা বা তথ্য প্রাপকের কাছে পেশ করে। এটি বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বিভক্ত হতে পারে।
    • উদাহরণ: আশা করি তুমি ভালো আছো। আমি এখন একটি নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছি...
  5. সমাপনী শুভেচ্ছা:
    • চিঠির শেষে শুভেচ্ছা জানানো হয়, যা সমাপ্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত “ইতি” বা “শুভেচ্ছান্তে” দিয়ে শেষ হয়।
    • উদাহরণ: শুভেচ্ছান্তে,
  6. স্বাক্ষর:
    • প্রেরকের নাম ও স্বাক্ষর চিঠির শেষে উল্লেখ করা হয়।
    • উদাহরণ: তোমার বন্ধু, [প্রেরকের নাম]

একটি সম্পূর্ণ চিঠির উদাহরণ

তারিখ: ০৭/০৬/২০২৪
[প্রেরকের ঠিকানা]

প্রিয় বন্ধু,

আশা করি,তুমি ভালো আছো। আমিও ভালো আছি। আমি এখন একটি নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছি এবং এখানে অনেক নতুন বন্ধু পেয়েছি। আমার নতুন স্কুলটি খুবই সুন্দর এবং শিক্ষকেরাও খুবই ভালো।

আমি খুব শিগগিরই তোমার সাথে দেখা করতে চাই। তুমি কেমন আছো? তোমার নতুন ক্লাসের অভিজ্ঞতা কেমন? আমাকে জানিও।

শুভেচ্ছান্তে,
তোমার বন্ধু,
[তোমার নাম]

এভাবে একটি চিঠি বা পত্রের অংশগুলো গঠিত হয়।

একটি পত্রের প্রধান অংশ কয়টি?

  • দুইটি
  • তিনটি
  • চারটি
  • পাঁচটি

ব্যক্তিগত পত্রে কতটি অংশ থাকে?

  • চার
  • পাঁচ
  • ছয়
  • সাত

পত্র বা চিঠির ধরণ | বিভিন্ন ধরণের পত্র

চিঠি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে এবং প্রতিটি ধরণের চিঠি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপটে লেখা হয়। প্রধান চিঠির ধরণগুলো হলো:

১. আনুষ্ঠানিক চিঠি (Formal Letter):

আনুষ্ঠানিক চিঠি সাধারণত সরকারি বা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয় এবং এতে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো ও ভাষা ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:

  • আবেদনপত্র (Application Letter)
  • চাকরির জন্য আবেদন (Job Application)
  • অফিসিয়াল চিঠি (Official Letter)
  • ব্যবসায়িক চিঠি (Business Letter)
  • অনুরোধ পত্র (Request Letter)

২. অনানুষ্ঠানিক চিঠি (Informal Letter):

অনানুষ্ঠানিক চিঠি বন্ধু, পরিবার বা পরিচিতজনদের কাছে লেখা হয় এবং এতে ভাষা ও শৈলী অনেকটা স্বাভাবিক ও অবাধ হয়। উদাহরণ:

  • ব্যক্তিগত চিঠি (Personal Letter)
  • শুভেচ্ছা চিঠি (Greetings Letter)
  • ধন্যবাদ চিঠি (Thank You Letter)
  • আমন্ত্রণ পত্র (Invitation Letter)

৩. আধা-আনুষ্ঠানিক চিঠি (Semi-Formal Letter):

আধা-আনুষ্ঠানিক চিঠি এমন পরিস্থিতিতে লেখা হয় যেখানে প্রাপক ও প্রেরকের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সম্পর্ক বা পরিচিতি থাকে, তবে চিঠিটি কিছুটা আনুষ্ঠানিক ভাষা ও শৈলীতে লেখা হয়। উদাহরণ:

  • শিক্ষক বা অধ্যাপককে চিঠি (Letter to a Teacher/Professor)
  • অফিসের সহকর্মীকে চিঠি (Letter to a Colleague)

৪. ব্যবসায়িক চিঠি (Business Letter):

ব্যবসায়িক চিঠি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিনিময় হয়। উদাহরণ:

  • আদেশ পত্র (Order Letter)
  • অভিযোগ পত্র (Complaint Letter)
  • অনুসন্ধান পত্র (Inquiry Letter)
  • বাণিজ্যিক চিঠি (Commercial Letter)

৫. ধন্যবাদ পত্র (Thank You Letter):

এই চিঠিগুলো ধন্যবাদ জানাতে লেখা হয়। উদাহরণ:

  • উপহার বা সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ (Thank You for Gift/Help)
  • সাক্ষাৎকারের জন্য ধন্যবাদ (Thank You for Interview)

৬. প্রস্তাব পত্র (Proposal Letter):

এই চিঠিগুলো কোন প্রস্তাব বা প্রস্তাবিত কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে লেখা হয়। উদাহরণ:

  • ব্যবসায়িক প্রস্তাব (Business Proposal)
  • প্রকল্প প্রস্তাব (Project Proposal)

প্রতিটি ধরণের চিঠির নিজস্ব একটি নির্দিষ্ট কাঠামো ও শৈলী থাকে যা চিঠির উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে।

আরও পড়ুন: উপসর্গ কাকে বলে? উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি? উপসর্গ যোগে শব্দ গঠন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top