SC > বিজ্ঞান > ত্বরণ কী? ত্বরণ কাকে বলে? ত্বরণের মাত্রা ও নির্ণয়ের সূত্র

ত্বরণ কী? ত্বরণ কাকে বলে? ত্বরণের মাত্রা ও নির্ণয়ের সূত্র

ত্বরণ হলো বেগের পরিবর্তনের হার, যা সময়ের সাথে বস্তুর গতি বৃদ্ধি বা হ্রাসের পরিমাপ করে। এটি একটি ভেক্টর রাশি, এবং একক মিটার/সেকেন্ড²।

ত্বরণ

ত্বরণ কী? ত্বরণ কাকে বলে?

ত্বরণ (Acceleration) হল কোনো বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হার। অর্থাৎ, একটি বস্তুর গতি সময়ের সাথে কত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, তা ত্বরণের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। ত্বরণ হল বেগের পরিবর্তনের হার এবং এটি একটি ভেক্টর রাশি, যার মানে এটি একটি দিক নির্দেশনা সহকারে পরিমাপ করা হয়।

ত্বরণকে গাণিতিকভাবে এভাবে প্রকাশ করা হয়:

a =Δv / Δt

এখানে,

  • a = ত্বরণ
  • Δt = সময়ের পরিবর্তন
  • Δv = বেগের পরিবর্তন

যদি একটি বস্তু এক সেকেন্ডে তার বেগ ১০ মিটার/সেকেন্ড থেকে ২০ মিটার/সেকেন্ডে বৃদ্ধি পায়, তবে তার ত্বরণ হবে ১০ মিটার/সেকেন্ড²।

ত্বরণ ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে। ধনাত্মক ত্বরণ মানে বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর ঋণাত্মক ত্বরণ (যা প্রায়ই মন্দন বলা হয়) মানে বেগ কমছে।

ত্বরণের মাত্রা

ত্বরণের মাত্রা (Dimension of Acceleration) হল সেই মৌলিক রাশিগুলির সমন্বয় যেগুলি ত্বরণ প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়।

ত্বরণ হল বেগের পরিবর্তনের হার প্রতি সময়ে। বেগের মাত্রা হলো [LT⁻¹] এবং সময়ের মাত্রা [T]। তাই ত্বরণের মাত্রা নির্ণয় করা যায় নিম্নলিখিতভাবে:

a = v / t

ত্বরণের মাত্রা = [LT⁻¹] / [T] = [LT⁻²]

সুতরাং, ত্বরণের মাত্রা হলো [LT⁻²], যেখানে:

  • (L) = দৈর্ঘ্যের মাত্রা
  • (T) = সময়ের মাত্রা

আরও পড়ুন: নক্ষত্র কাকে বলে? নক্ষত্র কয়টি ও কি কি?

ত্বরণ নির্ণয়ের সূত্র | ত্বরণ এর সূত্র কী?

ত্বরণ নির্ণয়ের জন্য মূল সূত্রটি হলো:a = Δv / Δt

এখানে,

  • a = ত্বরণ (Acceleration)
  • Δv = বেগের পরিবর্তন (Change in velocity)
  • Δt = সময়ের পরিবর্তন (Change in time)

এই সূত্রটি বলে যে, ত্বরণ হলো বেগের পরিবর্তনের হার প্রতি সময়ে।

এছাড়াও, ত্বরণ নির্ণয়ের জন্য কয়েকটি অন্যান্য প্রয়োজনীয় সূত্র রয়েছে, যেমন:

সুষম ত্বরণ (Uniform Acceleration) এর ক্ষেত্রে: v = u + at

এখানে,

  • v = চূড়ান্ত বেগ (Final velocity)
  • u = প্রাথমিক বেগ (Initial velocity)
  • a = ত্বরণ (Acceleration)
  • t = সময় (Time)

স্থানচ্যুতি (Displacement) নির্ণয়ের সূত্র: s = ut +1/2at2

এখানে,

  • s = স্থানচ্যুতি (Displacement)
  • u = প্রাথমিক বেগ (Initial velocity)
  • t = সময় (Time)
  • a = ত্বরণ (Acceleration)
  1. বেগ এবং স্থানচ্যুতির মধ্যে সম্পর্ক: v2 = u2 + 2as এখানে,
    • v = চূড়ান্ত বেগ (Final velocity)
    • u = প্রাথমিক বেগ (Initial velocity)
    • a = ত্বরণ (Acceleration)
    • s = স্থানচ্যুতি (Displacement)

এই সূত্রগুলো বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ত্বরণ নির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়।

ত্বরণ নির্ণয়ের একক কি?

ত্বরণ নির্ণয়ের একক হল মিটার প্রতি সেকেন্ড বর্গ (m/s²) বা মিটার প্রতি সেকেন্ড প্রতি সেকেন্ড (m/s²)

এখানে:

  • “মিটার (m)” দৈর্ঘ্যের একক, যা বেগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • “সেকেন্ড (s)” সময়ের একক, যা ত্বরণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো বস্তুর ত্বরণ 5 m/s² হয়, এর অর্থ হল প্রতি সেকেন্ডে বস্তুর বেগ 5 মিটার/সেকেন্ড করে বৃদ্ধি পাচ্ছে বা কমছে।

ঋণাত্মক ত্বরণ কি?

ঋণাত্মক ত্বরণ (Negative Acceleration) হলো এমন একটি ত্বরণ যেখানে বস্তুর বেগ সময়ের সাথে সাথে কমে যায়। এটি প্রায়ই “মন্দন” (Deceleration) নামেও পরিচিত।

যখন কোনো বস্তু ধীরগতিতে চলতে শুরু করে, তখন তার বেগ কমে যায় এবং ত্বরণ ঋণাত্মক হয়। ঋণাত্মক ত্বরণে বস্তুর গতি এবং ত্বরণ বিপরীত দিকে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি গাড়ি ২০ মিটার/সেকেন্ড বেগে চলতে শুরু করে এবং কিছু সময় পরে তার বেগ ১০ মিটার/সেকেন্ডে নেমে আসে, তবে এই সময়ে গাড়ির ত্বরণ ঋণাত্মক হবে, কারণ বেগ কমে যাচ্ছে।

তাৎক্ষণিক ত্বরণ কাকে বলে?

তাৎক্ষণিক ত্বরণ (Instantaneous Acceleration) হলো কোনো বস্তুর নির্দিষ্ট মুহূর্তে বা নির্দিষ্ট সময়ে বেগ পরিবর্তনের হার।

যখন আমরা খুবই ছোট একটি সময়ের ব্যবধানে বস্তুর ত্বরণ নির্ণয় করি, তখন সেটাকে তাৎক্ষণিক ত্বরণ বলা হয়।

উদাহরণ: একটি গাড়ি যখন চলতে শুরু করে এবং আপনি কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তে তার ত্বরণ জানতে চান, তখন সেই মুহূর্তের বেগ পরিবর্তনের হারই হবে তাৎক্ষণিক ত্বরণ।

কৌণিক ত্বরণ কাকে বলে?

কৌণিক ত্বরণ (Angular Acceleration) হলো কোনো বস্তুর কৌণিক বেগের পরিবর্তনের হার। অর্থাৎ, এটি নির্ণয় করে যে কোনো বস্তু যখন একটি নির্দিষ্ট অক্ষে ঘূর্ণন করছে, তখন তার ঘূর্ণনের গতি (কৌণিক বেগ) কত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে।

কৌণিক ত্বরণের একক হল রেডিয়ান প্রতি সেকেন্ড বর্গ (rad/s²)

উদাহরণ: একটি ফ্যান যখন বন্ধ হয়, তখন তার ঘূর্ণনের গতি ধীরে ধীরে কমে যায়। এই ধীরে ধীরে কমার প্রক্রিয়াটিই কৌণিক ত্বরণের একটি উদাহরণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top