SC > বিজ্ঞান > কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো?

কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো?

কিডনি হলো মানবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল সরিয়ে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য সাধারণত বিভিন্ন পরীক্ষা এবং মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়। এই পরীক্ষা ও মানদণ্ডের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় কিডনি কতটা ভালো কাজ করছে বা এতে কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা। আজকের আর্টিকেলে আমরা কিডনির পয়েন্ট সম্পর্কে আলোচনা করব।

কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো?

কিডনির স্বাভাবিক কার্যকারিতা সাধারণত GFR ৯০ বা তার উপরে থাকে। ক্রিয়েটিনিন লেভেল পুরুষদের জন্য ০.৬-১.২ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং মহিলাদের জন্য ০.৫-১.১ মিলিগ্রাম/ডিএল স্বাভাবিক।

কিডনি কত পয়েন্ট থাকলে নরমাল?

কিডনির স্বাভাবিক কার্যকারিতা সাধারণত GFR ৯০ বা তার উপরে থাকে। ক্রিয়েটিনিন লেভেল পুরুষদের জন্য ০.৬-১.২ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং মহিলাদের জন্য ০.৫-১.১ মিলিগ্রাম/ডিএল স্বাভাবিক।

কিডনির সাইজ কত হলে ভালো?

স্বাভাবিক কিডনির সাইজ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৫-৭ সেন্টিমিটার চওড়া। এ সাইজের বাইরে গেলে কিডনি সমস্যার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

কিডনির কত পয়েন্ট নষ্ট হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়?

কিডনির GFR ১৫ বা তার নিচে থাকলে কিডনি কার্যকারিতা গুরুতরভাবে কমে যায় এবং ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন: রক্তে এলার্জি হলে তা দূর করার উপায় কী?

কিডনির পয়েন্ট বা ফাংশন মূল্যায়নের পদ্ধতি

কিডনির কার্যকারিতা নির্ধারণের জন্য কয়েকটি সাধারণ পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট (GFR):

  • GFR হলো একটি সংখ্যা যা কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি কিডনি প্রতি মিনিটে কতটা রক্ত ফিল্টার করতে পারছে, তা নির্দেশ করে।
  • GFR ৯০ বা তার উপরে থাকলে কিডনি কার্যকারিতা সাধারণত ভালো থাকে।
  • GFR ৬০-৮৯ হলে কিডনির কিছুটা সমস্যা থাকতে পারে, কিন্তু এটি এখনও সাধারণত কার্যক্ষম।
  • GFR ৩০-৫৯ হলে মাঝারি থেকে তীব্র কিডনি রোগ হতে পারে।
  • GFR ১৫-২৯ হলে কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি থাকে।
  • GFR ১৫-এর নিচে হলে কিডনি সম্পূর্ণভাবে অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং ডায়ালাইসিস বা প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে।

সিরাম ক্রিয়েটিনিন লেভেল:

  • ক্রিয়েটিনিন হলো একটি বর্জ্য পদার্থ যা কিডনি রক্ত থেকে ফিল্টার করে বের করে দেয়।
  • সাধারণত, পুরুষদের জন্য ০.৬-১.২ মিলিগ্রাম/ডিএল এবং মহিলাদের জন্য ০.৫-১.১ মিলিগ্রাম/ডিএল ক্রিয়েটিনিন লেভেল স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচিত হয়।
  • ক্রিয়েটিনিন লেভেল বেশি হলে কিডনি কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সংকেত দেয়।

রক্তে ইউরিয়া নাইট্রোজেন (BUN):

  • BUN হলো কিডনি ফাংশনের আরেকটি সূচক যা কিডনি রক্ত থেকে ইউরিয়া কতটা ভালোভাবে বের করতে পারছে তা পরিমাপ করে।
  • সাধারণত, ৭-২০ মিলিগ্রাম/ডিএল BUN লেভেল স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।

কিডনির পয়েন্ট বা ফাংশন ভালো রাখতে করণীয়

কিডনির পয়েন্ট বা ফাংশন ভালো রাখতে হলে আপনাকে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করতে হবে:

  1. পর্যাপ্ত পানি পান: কিডনি ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। এটি কিডনি ফিল্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে।
  2. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ফলমূল, শাকসবজি, কম লবণযুক্ত খাবার, এবং কম প্রোটিনযুক্ত খাবার কিডনি ভালো রাখতে সহায়ক।
  3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
  4. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কিডনির ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ।
  5. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: কিডনির ফাংশন নিয়মিত পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, বা কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে।

উপসংহার

কিডনি ফাংশন মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা এবং মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে GFR সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। GFR ৯০ বা তার উপরে থাকলে কিডনি ভালো বলে মনে করা হয়। ক্রিয়েটিনিন এবং BUN লেভেলও কিডনির স্বাস্থ্যের সূচক হিসেবে কাজ করে। কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাদ্যাভ্যাস, রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য। কিডনি ফাংশন সম্পর্কিত যে কোনো সন্দেহ বা সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top