SC > অর্থনীতি > অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি কত প্রকার ও কি কি?

অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি কত প্রকার ও কি কি?

আজকের আর্টিকেলে আমরা অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি কত প্রকার ও কি কি?অর্থনীতির জনক কে? ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করি।

অর্থনীতি কাকে বলে

অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি সম্পর্কে অর্থনীতিবিদদের সংঙ্গা

অর্থনীতি হলো সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা যা পণ্য ও সেবার উৎপাদন, বিতরণ, ব্যবহার এবং বিনিময় নিয়ে আলোচনা করে। এটি ব্যক্তি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের আচরণ বিশ্লেষণ করে যখন তারা সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নির্ধারণ করে। অর্থনীতির প্রধান উদ্দেশ্য হল সীমিত সম্পদ ও অসীম চাহিদার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা এবং সেইসাথে মানুষকে কিভাবে সেই সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে সর্বাধিক উপকার লাভ করা যায় তা নির্ধারণ করা।

অর্থনীতির বিভিন্ন সংজ্ঞা বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রদান করা হয়েছে। নিচে কয়েকজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের সংজ্ঞা দেওয়া হলো:

  • অ্যাডাম স্মিথ: অ্যাডাম স্মিথকে অর্থনীতির জনক বলা হয়। তিনি অর্থনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে: “অর্থনীতি হল একটি জাতির সম্পদ উৎপাদন এবং বণ্টনের অধ্যয়ন।” তার বিখ্যাত গ্রন্থ “The Wealth of Nations”-এ তিনি ব্যক্তির স্বার্থের মাধ্যমে সমষ্টিগত কল্যাণ অর্জনের ধারণা দেন।
  • অ্যালফ্রেড মার্শাল: অ্যালফ্রেড মার্শাল অর্থনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেন এভাবে: “অর্থনীতি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অধ্যয়ন যা সম্পদের ব্যবহার, উৎপাদন এবং বণ্টনের সাথে সম্পর্কিত।” তিনি তার গ্রন্থ “Principles of Economics”-এ এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন।
  • লিওনেল রবিন্স: লিওনেল রবিন্স অর্থনীতির একটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা প্রদান করেন: “অর্থনীতি হল মানুষের আচরণের একটি বিজ্ঞান যা সীমিত সম্পদ এবং অসীম চাহিদার মধ্যে সম্পর্কিত।” তার মতে, অর্থনীতি সম্পদের বন্টন ও ব্যবহার সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্তমূলক বিজ্ঞান।
  • পল সামুয়েলসন: পল সামুয়েলসন অর্থনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেন এভাবে: “অর্থনীতি এমন একটি বিজ্ঞান যা সীমিত সম্পদ দিয়ে সর্বাধিক চাহিদা পূরণের উপায় খুঁজে বের করে।” তার বিখ্যাত গ্রন্থ “Economics: An Introductory Analysis” এ তিনি এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন।
  • জন মেনার্ড কেইনেস: কেইনেস তার “The General Theory of Employment, Interest, and Money” গ্রন্থে অর্থনীতির সংজ্ঞা প্রদান করেন: “অর্থনীতি হল একটি সমাজের সামগ্রিক আয়ের এবং সম্পদ বণ্টনের উপর প্রভাব ফেলার প্রক্রিয়া ও নীতির অধ্যয়ন।”

অর্থনীতি কত প্রকার ও কি কি?

অর্থনীতি প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত:

  1. মাইক্রোইকনোমিক্স (Microeconomics) / ব্যাষ্টিক অর্থনীতি : এটি ছোট ছোট অর্থনৈতিক ইউনিট, যেমন ব্যক্তি, পরিবার, এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করে।
  2. ম্যাক্রোইকনোমিক্স (Macroeconomics) / সামষ্টিক অর্থনীতি: এটি বৃহৎ অর্থনৈতিক ইউনিট, যেমন একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, মোট উৎপাদন, কর্মসংস্থান, মূল্যস্তর এবং অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আলোচনা করে।

অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ শাখা

  • আন্তর্জাতিক অর্থনীতি: দেশগুলির মধ্যে পণ্য ও সেবার বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং আর্থিক প্রবাহ বিশ্লেষণ করে।
  • অর্থনৈতিক উন্নয়ন: দরিদ্র দেশগুলিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে।
  • শ্রম অর্থনীতি: শ্রম বাজার, মজুরি নির্ধারণ, কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিয়ে আলোচনা করে।
  • আর্থিক অর্থনীতি: আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাজার এবং যন্ত্রপাতি, যেমন ব্যাংক, স্টক মার্কেট এবং বীমা নিয়ে আলোচনা করে।
  • শিল্প অর্থনীতি: নির্দিষ্ট শিল্প এবং বাজারের কাঠামো, আচরণ এবং কর্মক্ষমতা বিশ্লেষণ করে।
  • পরিবেশ অর্থনীতি: অর্থনৈতিক কার্যকলাপের পরিবেশগত প্রভাব এবং পরিবেশগত নীতিগুলির অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করে।
  • সাংস্কৃতিক অর্থনীতি: অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে।

অর্থনীতির গুরুত্ব আলোচনা কর

অর্থনীতি আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, ব্যবসা এবং সরকারের নীতি নির্ধারণকে প্রভাবিত করে। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে পণ্য ও সেবার দাম কীভাবে নির্ধারণ হয়, সরকার কীভাবে অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এবং আমরা কীভাবে আমাদের সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারি।

ব্যক্তির জন্য:

  • সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে: আমাদের আয়, খরচ, বিনিয়োগ এবং बचत সম্পর্কে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে অর্থনীতি আমাদের সাহায্য করে।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নত করে: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আমাদের আরও বেশি পণ্য ও সেবা কিনতে এবং উন্নত জীবনযাপন করতে দেয়।
  • কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে: ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যখন লাভ করে তখন তারা আরও বেশি কর্মী নিয়োগ করে, যা বেকারত্ব হ্রাস করে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।

সমাজের জন্য:

  • দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করে: অর্থনৈতিক উন্নয়ন দারিদ্র্য হ্রাস করতে এবং সকলের জন্য জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে।
  • অসমতা হ্রাস করে: সরকারি নীতি অর্থনৈতিক অসমতা হ্রাস করতে এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি করতে পারে।
  • পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখে: পরিবেশগত অর্থনীতি টেকসই উন্নয়নকে উত্সাহিত করে এবং পরিবেশের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।

রাষ্ট্রের জন্য:

  • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে: সরকার অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করে যা বিনিয়োগ, উৎপাদন এবং কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করে।
  • বেকারত্ব হ্রাস করে: সরকার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং অন্যান্য উদ্যোগের মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস করতে পারে।
  • মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি প্রণয়ন করে যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • সাধারণ জনগণের জন্য সেবা প্রদান করে: সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের জন্য কর রাজস্ব ব্যবহার করে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে:

  • দারিদ্র্য বিমোচন: বাংলাদেশে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল দারিদ্র্য হ্রাস করা।
  • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলা:

  • জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, খরা এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধির মতো পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলায় অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য অর্থনৈতিক নীতি ও কৌশল প্রয়োজন।

মানবসম্পদ উন্নয়ন:

  • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই করার জন্য শিক্ষিত, দক্ষ এবং সুস্থ জনশক্তির প্রয়োজন।
  • মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য:

  • বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি।
  • নির্মাণ বৃদ্ধি এবং আমদানি নিয়ন্ত্রণ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রদান করতে সাহায্য করে।

সুশাসন:

  • সুষ্ঠু, দক্ষ এবং স্বচ্ছ শাসন ব্যবস্থা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
  • দুর্নীতি দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়িক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করে।

অর্থনীতির জনক কে?

অর্থনীতির জনক হিসেবে অ্যাডাম স্মিথ সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত।

১৭৭৬ সালে তিনি “দ্য ওয়েলথ অফ ন্যাশনস” নামক একটি যুগান্তকারী বই প্রকাশ করেন যা আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করে।

এই বইয়ে, স্মিথ ব্যক্তিগত স্বার্থ, শ্রম বিভাগ, বাজার ব্যবস্থা এবং অদৃশ্য হাত এর ধারণাগুলির উপর ভিত্তি করে একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি করেছিলেন।

তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে যখন ব্যক্তিরা তাদের নিজস্ব স্বার্থ অনুসরণ করে, তখন একটি অদৃশ্য হাত তাদের কাজকে সামগ্রিক সুবিধার দিকে পরিচালিত করে।

স্মিথের ধারণাগুলি বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক নীতি এবং চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করেছিল এবং আজও অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করে।

তবে, এটা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে স্মিথ অর্থনীতির প্রথম চিন্তাবিদ ছিলেন না।

অর্থনৈতিক ধারণাগুলির উপর আলোচনা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।

স্মিথের পূর্বে, মার্ক্যান্টিলিজম নামক একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রভাবশালী ছিল যা সম্পদের সঞ্চয় এবং বাণিজ্য ভারসাম্যের উপর জোর দিয়েছিল।

স্মিথের ধারণাগুলি মার্ক্যান্টিলিজমের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসাবে বিকশিত হয়েছিল এবং আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

অর্থনীতির ইতিহাস জটিল এবং অনেক চিন্তাবিদ অবদান রেখেছেন।

অ্যাডাম স্মিথ অবশ্যই অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বগুলির মধ্যে একজন এবং তাকে “অর্থনীতির জনক” হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

অর্থনীতির ১০ টি মৌলিক বা মূল নীতি

অর্থনীতি একটি জটিল বিষয় এবং এর বিভিন্ন নীতি ও ধারণা রয়েছে।

তবে, কিছু মৌলিক নীতি রয়েছে যা অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করে।

এই নীতিগুলি আমাদের ব্যক্তিগত আচরণ, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত এবং সরকারি নীতি বুঝতে সাহায্য করে।

১) সীমাবদ্ধ সম্পদ:

মানুষের চাহিদা অসীম, কিন্তু সম্পদ সীমাবদ্ধ।

অর্থনীতির এই মৌলিক নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং আমাদের সম্পদগুলি কীভাবে ব্যবহার করবেন তা সাবধানে বিবেচনা করতে হবে।

২) বিকল্প খরচ:

যখন আমরা কোন কিছু বেছে নিই, তখন আমরা অন্য কিছু ত্যাগ করি।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে প্রতিটি সিদ্ধান্তের একটি বিকল্প খরচ রয়েছে এবং আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই খরচগুলি বিবেচনা করা উচিত।

৩) সুযোগ ব্যয়:

একটি জিনিসের সুযোগ ব্যয় হল আপনি অন্য কিছু না করার জন্য ত্যাগ করতে হবে এমন সর্বোচ্চ মূল্য।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে আমাদের সিদ্ধান্তের সুযোগ ব্যয়গুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি যদি সেগুলি স্পষ্টভাবে মূল্যায়িত না হয়।

৪) যুক্তিবাদী মানুষ:

অর্থনীতি ধারণা করে যে মানুষ যুক্তিবাদী এবং তাদের স্বার্থ সর্বাধিক করার চেষ্টা করে।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে মানুষ কিভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের আচরণের পূর্বাভাস দিতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫) প্রণোদনা:

মানুষ তাদের আচরণ পরিবর্তন করার জন্য প্রণোদিত হয়।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে মানুষ কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের আচরণকে প্রভাবিত করার জন্য প্রণোদনা ব্যবহার করা যেতে পারে।

৬) বাণিজ্য সকলের জন্য উপকারী:

যখন দুটি পক্ষ স্বেচ্ছায় বাণিজ্য করে, তখন উভয় পক্ষই উপকৃত হয়।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে বাণিজ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

৭) বাজার ব্যবস্থা:

বাজার ব্যবস্থা দাম এবং উৎপাদন নির্ধারণের জন্য মূল্য সংকেত ব্যবহার করে।

এই নীতি আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করে যে বাজার কিভাবে কাজ করে এবং সরকার কীভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

৮) সরকারের ভূমিকা:

সরকার অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন আইন প্রণয়ন, সম্পত্তি অধিকার প্রয়োগ এবং সম্পত্তি সরবরাহ প্রদান।

৯) মুদ্রাস্ফীতি:

মুদ্রাস্ফীতি হলো পণ্য ও সেবার দামের সামগ্রিক স্তরের সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি।

এটি অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হতে পারে কারণ এটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে।

১০) বেকারত্ব:

বেকারত্ব হলো যখন শ্রমশক্তির একটি অংশ কাজ খুঁজে পায় না কিন্তু কাজ করতে ইচ্ছুক এবং সক্ষম।

বেকারত্ব অর্থনীতির জন্য একটি সমস্যা কারণ এটি অপচয়িত সম্পদ এবং সামাজিক অস্থিরতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

উল্লেখ্য যে এই তালিকাটি সম্পূর্ণ নয় এবং অর্থনীতির আরও অনেক নীতি রয়েছে।

আপনার আগ্রহের উপর নির্ভর করে, আপনি অর্থনীতির একটি নির্দিষ্ট নীতি সম্পর্কে আরও জানতে পারেন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, অর্থনীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতি যা বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক:

  • দারিদ্র্য বিমোচন: বাংলাদেশে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল দারিদ্র্য হ্রাস করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, সরকার দারিদ্র্য বিমোচন নীতি প্রণয়ন করে যা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের উপর জোর দেয়।
  • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, সরকার বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং উদ্যোক্তা কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করার জন্য নীতি প্রণয়ন করে।
  • খাদ্য নিরাপত্তা: বাংলাদেশের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, সরকার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য সঞ্চয় উন্নত করার জন্য নীতি প্রণয়ন করে।
  • পরিবেশগত স্থায়িত্ব: জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য পরিবেশগত ঝুঁকি মোকাবেলায় পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, সরকার টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য নীতি প্রণয়ন করে।

অর্থনীতি ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। এটি আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে, দারিদ্র্য বিমোচন করতে এবং টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করে।বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে, অর্থনীতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top